তানভীর হোসেন-এর “রাতের অপেরা” থেকে পাঁচটি কবিতা
আদর্শ
আদর্শ কে আমি এক গোপন বাক্সে
লুকিয়ে রেখেছি ডাকটিকিটের মতো
একটা বেড়াল কাঁটার দিকে লাফ দিচ্ছে
না পেয়ে ছায়া ভেবে আবার দিচ্ছেও না
আমি ভাবছি টিকিটগুলো থেকে
কিছু ওকে দিয়ে দিই
ও কাঁটা ভেবে বাড়ী নিয়ে যাক
একটু খেয়ে বাকিটা জমিয়ে রাখুক
লুকিয়ে রাখুক!
তুমি- আমি
বায়ু বইছে ডিঙি কাঁপছে এই যমুনায়
জল দুলছে মৃদু ফুলছে শুধু কেউ নাই
জানি তুমিও সেই রাত্রির কথা ভাবছো
সেই চাঁদটি তার উষ্ণতা নিয়ে কাঁপছো
হাহা মানসে কত প্রশ্নের নীল অভিবাস
কেন বেদনা কেন তাড়না এতো হাহাকার
আমি ভিজেছি সেই সাগরে যার স্ফীত বুক
আর মেরেছি ক্রূর রাক্ষস যারা স্মৃতিভুক
তুমি কাঁপছো আমি হাসছি তুমি নিরাকার
আমি যান্ত্রিক গোর খুঁড়ছি হবে প্রতিকার
আধা জ্যোৎস্না ধীর বৃষ্টির ফোঁটা চমকায়
দেখো রশ্মির স্নায়ু ট্রেইলে আর আমি নাই।
রোজী জোন্স
রোজী জোন্সকে যখন প্রথম দেখি
হিমালয়ের সাথে তার হুবহু মিল
চূড়ায় ফুটে ছিল লুকিয়ে দেখার
মতো তীক্ষ্ণ পরিচর্যা যেন প্রকাশিতব্য মন্যুমেন্ট
মৈথুন উপলক্ষ নিয়ে বাড়ি ফিরবে বলে
উৎসুক কংকালেরা ঘিরেছিল তাকে
আমি রোজীকে জিগেস করেছিলাম,
উচ্চতা সম্পর্কে।পাত্তা না দিয়ে
জবাফুল তোলা সিল্কজামায় সে
ভেসে গিয়েছিল বেলাভূমির দিকে
আর সেখানে বালির শ্লেটে নিজের
যে নাম লিখেছিল,বুভুক্ষু নীল ডাস্টারে
তা নিলীন হতেই আমি বলেছিলাম,রোজী!
সবচে উঁচু পর্বতগুলো আসলে সমুদ্রে ঢাকা।
জলের গান
আমি সে নৌকার মাঝি জলাধারে দিবারাতি
………………..ঘুরে ফিরে জলের অতলে
খুঁজি মুখ নিশ্চুপ। এমন স্থৈর্যের রূপ
………………..শুধু দেখেছি পানকৌড়িতে।
মীনের মায়াবী তালে কত খল জোছনাতে
………………..শুনে গেছি রমণের ধ্বনি
ভাবি শুধু অবতার তবে এ কী লীলা তার
………………..মম দেহে নাই কেন যোনী!
ঘুরেছি ঘাটের মরা যেভাবে বেহুলা ভেলা
………………..ভ্রমেছিল দিশাহীন জল
নদীকূলে করি বাস বৃথা মম জলবাস
………………..ত্যাগে হব ঘোর উভচর।
পাহাড়ি নদীর বুকে শত রতিহত দুখে
………………..অচিন নারীর আঁকি মুখ
দূর থেকে দূরে সুরে স্রোতে সরে সরে পুড়ে
………………..বাঁধিয়েছি আদিম অসুখ।
নবুয়্যত
মৃত্যুতে আমার গভীর ভয়
নইলে নবুয়্যতের দিনই
আত্মহন্তারক হতাম
আহা ধোঁয়া,ঐ গন্ধরাজের
কূটবেড়াদ্বীপ ছেড়ে অনুকূল হও
আরেকটু প্রসারিত বুকে টানি
পৃথিবীতে এতো শীত,
এতো ঠান্ডা মাথার খুনী!