হাসান মসফিক – এর কবিতা

অনন্ত বিরহ
তোমার বাগানে ফোটা শাদা নীল অপরাজিতার দিকে আমি আর তাকাব না। কোন গোলাপ অত সস্তায় আর না ফুটুক। গুনবনা আর কোন কচি নয়নতারা। সমস্ত মনোযোগ নিয়ে টবে পানি ঢালাটুকু আমি আর দেখব না। ফণীমনসা বাড়ুক, আগাছায় হয়ে যাক গভীর জঙ্গল। টুকরো বাগানটুকু হয়ে উঠুক গাঢ় সবুজের বন্দর। একে একে লাল পিঁপড়ের ঘর ভেঙে দেওয়া আমি আর দেখব না। টুকরিগুলো আর ফেলব না, আলাদা করব না আর কাউকে।
তবু সতেজ আগাছা কেটে যাওয়ার শোক, কান্নায় ছুটতে থাকা ঘর ভেঙে যাওয়া পিঁপড়াদের অনন্ত বিরহ অন্তত তাকে দিও
১৪ বৈশাখ, ১৪৩০
প্রকৃত ফুল
শীত চলে গেল। শিরিষ ফোটা শুরু হইল। পরিযায়ী পাখি ফিরে গেল নীড়ে। তোমার মনে আমি তবু সংখ্যালঘুই হইয়া রইলাম।
কোকিল ডাকল না এখনো। দু’টি বসন্ত বাউরি ডাকুক আজ। এ আমার শহর। তুমিও থাকো আরও ক’দিন। অন্তত দেখাটা হোক; যেটুকু দেখা যায়- ছাতা কুড়িয়ে নেওয়ার ছল করে
উদ্দেশ্যহীন, তুমিও ফুটে থাকো, হে প্রকৃত ফুল
৯ ফালগুন, ১৪৩০
নয়নতারার শোক
কেবল তোমার আভাসটুকু দেখা যাচ্ছিল, পাওয়া যাচ্ছিল এঁটো আকাশ শুকিয়ে যাওয়ার প্রজ্ঞাটুকু। হে তীর্থফেরত শাখামৃগ, তিলভর্তি গোখরো, হে রক্তভোঁদড়- আমি রবো দাঁড়িয়ে বাক্যের নিশি ঝুলন্ত বাংকার আর প্রশ্নের কেন্দ্রীয় কারাগার বুকে নিয়ে। আমাকে পেরিয়ে যাও হে প্রাজ্ঞ কচ্চপ, অনন্ত বিষ্ফার নিয়ে পাশে এসে বসুক এক মারমেইড। ক্যানোলা হাতে ছুটে যাক- যোগি পান্ডা।
মুঠোভর্তি নয়নতারার শোক নিয়ে আমিও চলে যাব। যেনবা- আমিই নির্বাণ, এ আমার পৌরাণিক অহম
২২ ফাল্গুন, ১৪৩০